পানিবাহিত রোগ ও করণীয়
Published on August 31, 2024
অপরিশুদ্ধ পানি পান করার মাধ্যমে অথবা সেই পানি রন্ধন ইত্যাদি কার্যে ব্যবহার করার ফলে যে ধরনের রোগ-ব্যাধি সংক্রামিত হয়ে থাকে তাকেই বলা হয় পানিবাহিত রোগ বা জলবাহিত রোগ। পানিবাহিত রোগ সারা বিশ্বেই আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অনুন্নত বিশ্বে শিশুদের পানিবাহিত রোগ ব্যাপকভাবে আক্রমণ করে।
প্রতিবছর বিশ্বে পানিবাহিত রোগে ১৫ লাখ লোক আক্রান্ত হয় এবং অজ্ঞতা, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, অর্থনৈতিক দৈন্যতা, সর্বোপরি স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে ৮ লাখ ৪২ হাজার লোক অকালে মৃত্যুবরণ করছে।
মানুষ ও অন্যান্য জীবজন্তুর বিভিন্ন রোগের জন্য প্রধানত দায়ী রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব (ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস) এবং কয়েক রকমের পরজীবী। এ ধরনের সংক্রামক রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবেরা নানা রকমের কৌশলের সাহায্যে পরিবেশে বেঁচে থাকে বা বিস্তার লাভ করে। বিস্তার লাভের জন্য তিনটি প্রধান পন্থা হচ্ছে- বাতাস, পানি এবং শারীরিক সংস্পর্শ। শ্বাসনালীর মাধ্যমে দেহে প্রবেশের জন্য বাতাসই মাধ্যম রূপে কাজ করে। অপর পক্ষে পরিপাক তন্ত্রের সংক্রমণের মাধ্যম হলো পানি। পানিতে মিশে থাকা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও বিভিন্য প্রকার রাসায়নিক পদার্থ মানব শরীরে
বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃষ্টি করে।
নিচে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদির মাধ্যমে সৃষ্ট রোগ সমূহ উল্লেখ করা হলঃ
virus
পানিতে মিশে থাকা বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি সমূহঃ
টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, ডায়রিয়া, জন্ডিস, গ্যাসট্রিক, পেটের পীড়া, বদহজম, বমি, জ্বর, মাথা ব্যাথা, সর্দি-কাশি, স্বাসযন্ত্রের সংক্রমন, অবসাদ, এলার্জি, ইন্দ্রিয় বৈকল্য ইত্যাদি।
bacteria
পানিতে মিশে থাকা বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি সমূহঃ
ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নাক দিয়ে রক্তক্ষরন, গ্যাসট্রিক, ক্ষুধামন্দা, অবসাদ, মুত্রাশয় সংক্রমন, মস্তিস্ক ঝিল্লি প্রদাহ ইত্যাদি।
পানিতে মিশে থাকা বিভিন্ন প্রকার এলজেল সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি সমূহঃ
হেপাটাইটিস-ই, জ্বর, স্বাসযন্ত্রের সংক্রমন, গ্যাসট্রিক, ফাংগাল সংক্রমন, চর্মরোগ, যকৃতের প্রদাহ, মস্তিস্ক ও স্নায়ুবিক সংক্রমন, পোলিও ইত্যাদি।
পানিতে মিশে থাকা আর্সেনিক ও ক্লোরিন-সৃষ্ট রোগসমূহঃ
ফুসফুসের ক্যান্সার, গলব্লাডার ক্যান্সার, স্কিন ক্যান্সার
পানিতে মিশে থাকা লেড, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফেট ও ক্যাডমিয়াম সৃষ্ট রোগসমূহঃ
কিডনীতে পাথর, কিডনী ড্যামেজ
পানিতে মিশে থাকা সেলেনিয়াম, লেড, কপার ও ক্যাডমিয়াম-সৃষ্ট রোগসমূহঃ
বিকলাঙ্গতা, দৈহিক বৃদ্ধি হ্রাস, দাঁতক্ষয়
উপরিক্ত এসকল রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানির কোন বিকল্প নেই। আর পানিকে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি করতে হলে পানিতে মিশে থাকা সকল ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতেই হবে!
Comments ( 0 )